Symphony D-130 মোবাইলটির পূর্ণ ফিচার তাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিতভাবে দেওয়া আছে। বাংলাদেশের বাজারে মোবাইলটি ২০১৩ সালের মে মাসে
বিক্রয় শুরু হয়। ফিচার অনুযায়ী এটি খুব বেশি ভালো মানের মোবাইল নয়। তাই
সেটটির দামও বাংলাদেশে অন্যান্য মোবাইলের তুলনায় কম। মাত্র ২৫৯০ টাকা। তবে
যে বাজারে মাত্র ১০০০ টাকায় অনায়াসে নতুন মোবাইল সেট পাওয়া যায়, সেই বাজারে
২৫৯০ টাকাও অনেক বেশি।
আসুন,
সেটটির কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করি। সেটটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর
লং-ব্যাটারি। দৈহিক গঠন ও কাজ, দুটো দিকেই এটি লং! ৩০০০ মিলি
অ্যাম্পিয়ারের এই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিটি দীর্ঘ দিন চার্জ সংরক্ষণ করতে
পারে। সাধারণভাবে কথা বলতে চাইলে একবার চার্জের পর অনায়াসে সপ্তাহ দুয়েক
পার হয়ে যাবে। এই দিকটিই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। তবে অডিও,
ভিডিও এবং রেডিও চালালে মোটামোটি চার-পাঁচ দিন চলে যায়।
স্পেসিফিকেশনঃ সিম্ফোনি ডি ১৩০; লং ব্যাটারি।
ফোনটির কিছু বৈশিষ্ট্য (অভিজ্ঞতালব্ধ):
অপেক্ষাকৃত ভালো বৈশিষ্ট্য
- লং ব্যাটারি, লং চার্জ।
- অডিও, ভিডিও ও রেডিও সন্তোষজনক।
- ভিজিএ ক্যামেরা (দামের বিচারে সমান দামের অন্যান্য সিম্ফোনি মোবাইলের চেয়ে তুলনামূলক) ভালো।
- ছবি ও ভিডিও রেকর্ডিং।
- অডিও রেকর্ডিং, রেডিও রেকর্ডিং এবং ফোন কনভার্সেশন রেকর্ডিং।
- ডুয়াল সিম, ডুয়াল স্ট্যান্ডবাই।
- বড় স্ক্রিণ (240X320), বাংলা ল্যাঙ্গুয়েজ, পছন্দের রিংটোন।
- ব্ল্যাক লিস্ট, হোয়াইট লিস্ট, কলটাইম রিমাইন্ডার, অটো ইন্ডিং।
- বিল্ট-ইন অপেরা মিনি (V4.4.32206), ইয়াহু, ফেসবুক, টুইটার, ইন্টারনেট ব্রাউজারসহ কিছু সফটওয়্যার।
- জাভা সাপোর্টেড (তাই আমি ব্যাক্তিগতভাবে আজান, কোরআনিক দোয়া ও মোবাইল কোরআন সফটওয়্যার ব্যবহার করছি)।
- অপেক্ষাকৃত দ্রুত অপারেটিং ও ফিচারড ট্রান্সিশান।
- ব্লু-টুথ, ওয়েবক্যাম, কম্পিউটারে ডাটা স্টোরেজ, টর্স।
- গত চারমাসে ব্যবহারে কোন ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি নজরে পড়েনি।
মন্দ বৈশিষ্ট্য
- ব্যবহারযোগ্য ফোন মেমোরি মাত্র ৫৪৩.৫ কিলোবাইট। তাই, অবশ্যই মেমোরি কার্ড কিনতে হবে।
- কোথাও কল করলে ডায়ালিংয়ের সময় ফোন কানের কাছে না নিলে রিং হচ্ছে কি না বুঝা যায় না। তবে, Health dialing নামে Call setting-এ একটি অপশন আছে। এটিকে অন রাখলে যে কোন কল রিসিভ হওয়ার সাথে সাথে ভাইব্রেশন হয়।
- ব্যবহারযোগ্য ফোন মেমোরি কম থাকায় সামান্য বড় সাইজের কোন জাভা সফটওয়্যার ইনস্টল কিংবা ব্যবহার করা যায় না।
- ভিডিও প্লেয়ার মোটামোটি মানের হলেও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ভিডিও থেমে থেমে রেকর্ড হয়।
- ফোনটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন প্রাইভেসির ব্যবস্থা নেই। ফোন পাসওয়ার্ডের ব্যবস্থা থাকলেও তা শুধু সিম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কাজে দিবে। আবার তিনবার ভুল পাসওয়ার্ড টাইপ করলেই চিরতরে লক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফোনটি কাদের জন্যঃ
- যারা ভ্রমণ কিংবা ব্যবসার কাজে নিয়মিত লম্বা পথ যাতায়াত করেন, দীর্ঘস্থায়ী এই ফোনটি তাদের অনেক সহায়ক হবে। শুধু প্রয়োজনীয় কথা বলার কাজে ব্যবহার করলে মোটামোটি দশ বারো দিন নিশ্চিন্তে এবং কোন চার্জ দেওয়ার ঝামেলা ছাড়াই ফোনটি ব্যবহার করা যাবে।
- সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক ভাইদেরকে তাদের কোম্পানিগুলোতে টাকার বিনিময়ে মোবাইল চার্জ দিতে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে এই সেটটি ব্যবহারের ফলে তাদের সময় ও টাকা দুটোই সেভ হবে।
- চড় বা দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দা কিংবা স্বাভাবিক বিদ্যুত বিহীন এলাকার সৌরবিদ্যুত নির্ভর লোকজনের জন্য।
- এয়ারটেল, গ্রামীণ এবং বাংলালিংক সিম ব্যবহার করে নকেয়ার অনেক মোবাইলেও ফেসবুক জিরো চালানো যায় না। কিন্তু প্রক্সি এবং পোর্ট সেট করে এটিতে অনায়াসে ফেসবুক জিরো এবং ফ্রি নেট চালানো যায়।
- সিকিউরিটির জন্য কারো কথা বা কনভার্সেশন রেকর্ড রাখতে চাইলে এই ফোনটি অনেক সহায়ক।
- যারা বাংলা মেসেজ লিখতে পছন্দ করেন।
- ওয়েবক্যাম এবং ব্লু-টুথ যাদের জন্য অতি দরকারি।
ছবিঃ ১। সিম্ফোনি ডি ১৩০
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন